অনুসন্ধানী প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
অনিয়মই এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী দীপংকর খীসা বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়ম কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না এখানে। নানা উপায়ে অতিরিক্ত ব্যয় প্রাক্কলন, দরপত্র প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়ম-তথ্য ফাঁস, সমঝোতার নামে প্রকৌশলীদের অনৈতিক সুবিধা আদায়সহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির উৎসব চলছে এই দপ্তরে।
জানা যায়, ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশ করে এই দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপংকর খীসার দরপত্রের গোপন মূল্য বা ‘রেট শিডিউল’ ফাঁস করে দেন। তিনি নিম্নমানের কাজের বিল পরিশোধ করেছেন দেদার। কাজ পাইয়ে দেওয়া, বিল ও জামানতের চেক পরিশোধের ক্ষেত্রে গুনে গুনে বুঝে নেন কমিশন।
তথ্য সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থ বছরে চট্টগ্রামের প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করেন চট্টগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। যার মধ্যে পুরোনো প্রকল্প। পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব প্রকল্পের জন্য পুনঃদরপত্রের কথা উল্লেখ করেননি তিনি। এর আগে এই দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীকে অনিয়ম-দুর্নীতি ও নানা কারণে অন্যত্র বদলি করা হয়েছিল। কিন্তু তার উত্তরসুরী হয়ে ফের দরপত্র আহ্বান করে মোটা অঙ্কের কমিশন বাণিজ্যেই ব্যস্ত বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী দীপংকর খীসা
সম্প্রতি দুদকের এক প্রতিবেদনেও এই দপ্তরের অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে। জানা যায়, চট্টগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রাক্কলন, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন স্তরে দুর্নীতি, টেন্ডারের তথ্য ফাঁস, সমঝোতার নামে নির্বাহী প্রকৌশলী, দীপংকর খীসা অনৈতিক সুবিধা আদায় করছেন, আবার বিভিন্ন প্রকল্পে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারে ঠিকাদারদের সহযোগিতা করছেন, টেন্ডারের শর্তানুসারে কাজ বুঝে না নিয়ে ঠিকাদারদের অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহন করছেন এই দপ্তরের প্রকৌশলীরা।
এদিকে কাজের মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলীরা ঠিকাদারদের নানা অফারের লোভ সামলাতে না পেরে জড়িয়ে পড়ছেন নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে। মেরামত-সংস্কার কাজের নামে ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরির কাজেও সরকারি টাকা লোপাটে সহযোগিতা করছেন প্রকৌশলীরা। গত তিন অর্থ বছরে যোগসাজশে নয়ছয় করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করছেন নির্বাহী প্রকৌশলী দীপংকর খীসা ও তার দলবল এমন তথ্য পাওয়া গেছে। আবার এই দপ্তরের কয়েকজন প্রকৌশলীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজনের নামে-বেনামে ঠিকাদারি কাজ করছেন এমন তথ্যও পাওয়া যায়।
শিক্ষা প্রকৌশল সংশ্লিষ্টরা জানান, অসাধু প্রকৌশলী-ঠিকাদার সিণ্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়া চট্টগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে। ঠিকাদারদের থেকে প্রতি প্রকল্পের নির্ধারিত অনৈতিক ঘুষ ও পার্সেন্টিস নিয়ে বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী দীপংকর খীসা সরকার হয়েছেন আঙুল ফুলে কলাগাছ। তার গ্রামের বাড়িতে তিনি ক্রয় করেছেন জায়গা-জমি। স্ত্রী-শ্বশুর ও আত্মীয় স্বজনের নামে আছে ব্যাংক একাউন্ট। কিনেছেন ফ্ল্যাট, গড়েছেন অঢেল সম্পদ। এসব বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান করলে থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই দপ্তরের দুইজন কর্মকর্তা জানান, চট্টগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে ৭-৮ জনের একটি ঠিকাদার সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। তারা বছরের পর বছর নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারের ছত্রছায়ায় রয়েছেন। তারা বিভিন্ন এমপি-মন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে বড় বড় প্রকল্প হাতিয়ে নিয়েছেন। তাদের এসব কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মোটা অঙ্কের কমিশনে সহযোগিতা করেন নির্বাহী প্রকৌশলী দীপংকর খীসা অদক্ষ ও অভিজ্ঞতাহীন এসব ঠিকাদারের কারণে অধিকাংশ কাজ মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যার কারণে সরকারের ভাবমূর্তি নানাভাবে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
Editor & Publisher: Ashik Biswas
Office : Road No. 25 Bolck 12 / D Pallabi
Mirpur Dhaka 1216 ashik0191777@gmail.com
Mobile number 01770401138
ই- পেপার কপি