অনুসন্ধানী প্রতিবেদক
রূপগঞ্জ পূর্ব সাব-রেজিস্ট্রি অফিস পরিণত হয়েছে ঘুষের আখড়ায়। ঘুষ ছাড়া কোনো সেবা মেলে না তেমনি ঘুষেই মিলছে অহরহ জাল দলিল। ফলে ঘুষের কারবারেরই হাওয়া হয়ে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। এসব অপকর্মের হোতা হিসেবে অভিযোগের তীর সাব-রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ হানিফ এর দিকে। যদিও তিনি তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে জমি, প্লট রেজিস্ট্রি করে দিয়ে কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন এই সাব-রেজিস্ট্রার। ভূমি কর্মকর্তাদের নাম, সিল ও স্বাক্ষর ব্যবহার করে ভুয়া কাগজ তৈরি করার পর জমির শ্রেণি পরিবর্তনের মাধ্যমে দলিল করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এতে কিছু অসাধু দলিল লেখকও তাকে সহযোগিতা করে থাকেন। এরকম জাল দলিলের আটটি নথি এসেছে। এসব অপকর্মে মাসে অন্তত ৬০ লাখ টাকার ঘুষ বাণিজ্য হয় বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলিল করতে সরকারি ফি বাবদ ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করা থাকলেও সাব রেজিস্ট্রার হাতিয়ে নেন হাজার হাজার টাকা। রূপগঞ্জ পূর্ব আওতাভুক্ত এলাকার দলিল করতে নেন ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। আর উপজেলার বাইরের এলাকার জন্য ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। এ ছাড়াও, সাব কবলা দলিল করতে শতকরা ১১ টাকা হিসাবে ব্যাংকে জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। এক্ষেত্রে দলিলপ্রতি লাখে ৩০০ টাকা দিতে হয় সাব রেজিস্ট্রারকে। পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দলিলে ফি নেওয়ার নিয়ম না থাকলেও এ দলিলে ঘুষ দিতে হয় এক থেকে ১০ হাজার টাকা। হেবা ঘোষণা দলিল ফি-বিহীন করার বিধান থাকলেও নেওয়া হয় ১২০০-১৫০০ টাকা। বণ্টননামা দলিলে নেওয়া হয় ৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। কোনো দলিলের মূল পর্চা না থাকলে ফটোকপি পর্চায় নেওয়া হয় পাঁচ হাজার টাকা। এছাড়া দলিলের নকল তুলতে দলিলপ্রতি নেওয়া হয় দুই হাজার টাকা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাব রেজিস্ট্রি অফিসের জনৈক কর্মচারী বলেন, সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গড়ে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০টি দলিল হয়, অর্থাৎ মাসে দলিল হয় ১৩০০ থেকে ১৫০০টি। এসব খাত থেকে প্রতিমাসে শুধু সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে আয় হয় ৬০ লাখ টাকা। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল নিতে আসা কয়েকজন জমির মালিকের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তারা বলেন, দুপুর ২টা বাজলেই সাব-রেজিস্ট্রার ইচ্ছাকৃতভাবে সময়ক্ষেপণ করেন। বিকেল ৩টার পর থেকে বিলম্ব ফি নেওয়া হয়। জমির পরিমাণ ও ক্রেতাদের ধরন অনুযায়ী ৮০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। বিলম্ব ফির মাধ্যমে অধিকাংশ সময়ই রেজিস্ট্রি চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের বেশ কয়েকজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রূপগঞ্জে পূর্ব যোগদানের পর থেকেই মোহাম্মদ হানিফ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে খাড়া (জাল) দলিলেও তিনি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন। এ ছাড়া সরকারি ‘ক’ তালিকাভুক্ত সম্পত্তিও মোটা অঙ্কের বিনিময়ে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন। বিস্তারিত আরও জানতে আমাদের সঙ্গে থাকুন
Editor & Publisher: Ashik Biswas
Office : Road No. 25 Bolck 12 / D Pallabi
Mirpur Dhaka 1216 ashik0191777@gmail.com
Mobile number 01770401138
ই- পেপার কপি